শবে মেরাজ ও শবে বরাতের আমল যেনে নিন
শবে মেরাজ আমাদের সকলেরই শবে মেরাজ এবং শবে বরাতের আমল সর্ম্পকে ধারনা থাকা প্রয়োজন।আজকে আমি আপনাদের সাথে সেয়ার করবো শবে মেরাজ ও শবে বরাতের আমল গুলো কি কি,জানতে পোষ্টটি মনোযোগদিয়ে পরুন।
এই পোষ্টটি মনোযোগদিয়ে পরলে শবে মেরাজ ও শবে বরাতের কি কি আমল করতে হয় ১০০% সঠিক ধারনা পাবেন।একজন মুসলিম হিসাবে আমাদের শবে বরাতের আমল এবং শবে মেরাজ সর্ম্পকে জানতে হবে নিচে শবে মেরাজ ও শবে বরাতের আমল গুলো নিয়ে বিস্থারিত আলোচনা করাহয়েছে।
পোস্টসূচীপত্র:শবে মেরাজ ও শবে বরাতের আমল যেনে নিন
- শবে মেরাজ কাকে বলে?
- কত তারিখে হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মেরাজে গিয়েছিলেন?
- শবে মেরাজের রাতে ইবাদতের সওয়াব পাওয়া যাবে কি?
- শবে মেরাজ সম্পর্কে কিছু ভ্রান্ত ধারণা
- শবে মেরাজের রাতে মুসলমানদের করণীয়
- শবে বরাতের আমল ও ফজিলত
- শবে বরাতের অর্থ কী?
- শবে বরাত কাকে বলে?
- কোন দিনকে শবে বরাত বলা হয়?
- মানুষের কিছু ভ্রান্ত ধারণা
- কিছু কথা
শবে মেরাজ কাকে বলে?
আমাদের নবী হযরত মোহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে মহান আল্লাহ তা'আলা একদা এক রাতে জাগরিত অবস্থায় স্বশরীরে মক্কা শরীফ থেকে বাইতুল মুকাদ্দাস পর্যন্ত নিয়ে যান।সেখান থেকে সাত আসমানের উপরে যতটুক ইচ্ছে মহান
আরো পড়ুন : রোজার নিয়ত বাংলায়
আল্লাহ তায়ালা হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে নিয়ে যান।সেখানে আল্লাহর সাথে হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কথাবার্তা বলেন।তখনই মহান আল্লাহ তায়ালা মানুষের জন্য পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের বিধান দেন। সেই রাতেই হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবার দুনিয়াতে প্রত্যাবর্তন করেন।
কত তারিখে হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মেরাজে গিয়েছিলেন?
সাধারণভাবে প্রসিদ্ধ আছে যে, রজব মাসের ২৭ শে রাতে হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মেরাজে গিয়েছিলেন। তবে এ বিষয় নিয়ে বিজ্ঞ মুহাদ্দিছদের মধ্যে প্রচুর মত বিরোধ রয়েছে।
শবে মেরাজের রাতে ইবাদতের সওয়াব পাওয়া যাবে কি?
শবে মেরাজের রাত মুসলমান বান্দাদের জন্য একটি বরকতময় রাত।তবে এ রাতের ফজিলত সম্পর্কে হাদিসে বিশেষ করে কোন বর্ণনা দেয়া হয়নি।এরাতে নফল ইবাদত করলে বিশেষ অতিরিক্ত সওয়াব পাওয়া যাবে বা পরবর্তী দিন নফল রোজা রাখলে বিশেষ ফজিলত পাওয়া যাবে এরূপ মনে করা ঠিক নয়।
শবে মেরাজ সম্পর্কে কিছু ভ্রান্ত ধারণা
অনেক মুসলমান বান্দা আছেন যারা মনে করেন শবে মেরাজের রাতে সারারাত নফল ইবাদত বন্দেগী করলে অনেক বেশি সওয়াব পাওয়া যাবে।ইসলামিক দৃষ্টিতে এটি একটি ভ্রান্ত ধারণা।কেননা সহিহ হাদীসে শবে মেরাজ এর ফজিলত সম্পর্কে বিশেষভাবে কোন কিছু বর্ণনা করা হয়নি।কেউ যদি চায় এ রাতকে বিশেষ সওয়াবের রাত মনে না করে ইবাদত বন্দেগী করতে পারে।
শবে মেরাজের রাতে মুসলমানদের করণীয়
শবে মেরাজ এর রাতে বিশেষ কোনো সওয়াব এবং ফজিলত না থাকা সত্ত্বেও মুসলমান বান্দাদের উচিত এদিনে আল্লাহর ইবাদত করা এবং আল্লাহকে খুশি করা।সকল প্রকার কুসংস্কার এবং ভ্রান্ত ধারণা থেকে নিজেকে মুক্ত করে ঈমানকে শক্ত করা।
শবে বরাতের আমল ও ফজিলত
শবে বরাতের আমল গুলো একজন মুসলিম হিসাবে জানা প্রয়োজন।নিচে শবে বরাতের আমল গুলো বিস্থারিত আলোচনা করা হল:
শবে বরাতের অর্থ কী?
শবে বরাত কথাটি ফারসি শব্দ থেকে এসেছে।যার আরবি শব্দ লাইলাতুল বারা্আত।বরাত শব্দের অর্থ মুক্তি এবং শব শব্দের অর্থ রাত।অর্থাৎ শবে বরাত এর অর্থ মুক্তির রাত।
আরো পড়ুন : তারাবির নামাজের দোয়া
শবে বরাত কাকে বলে?
শবে বরাত এর রাতে মহান আল্লাহ তায়ালা অভাব-অনটন,রোগ-শোক ও বিপদ-আপদ থেকে মুক্তি চাওয়ার জন্য তাঁর বান্দাদের আহবান জানান এবং আল্লাহর কাছে মুক্তি চাইলে মহান আল্লাহ তা'আলা সবাইকে এসব থেকে মুক্তি প্রদান করেন,তাই এই রাতকে শবে বরাত বা মুক্তির রাত বলা হয়।
কোন দিনকে শবে বরাত বলা হয়?
শাবান মাসের ১৫্ ই রাত অর্থাৎ ১৪ সাবান দিবাগত রাতই হল এই শবে বরাত।হাদিস শরীফের আলোকে এবং কিতাবে বর্ণিত তথ্য অনুযায়ী শবে বরাত এ পাঁচটি আমলের কথা প্রমাণিত।নিচে শবে বরাতের আমল গুলো দেওয়া হল:
- ১৪ই শাবান দিবাগত রাতে সারা রাত জেগে নফল ইবাদত-বন্দেগি,জিকির ও তিলাওয়াতে লিপ্ত থাকা।এ রাতে আল্লাহর বান্দাগণ ইচ্ছেমতো নফল নামাজ পড়তে পারেন যে কোন সূরা দিয়ে।নফল নামাজ ঘরে পড়ায় উত্তম।একান্তভাবে কেউ যদি নামাজ পড়ার মতো পরিবেশ না পান তাহলে তারা মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়তে পারেন।
- শবেবরাতে বেশি করে দোআ করা।কেনোনা মহান আল্লাহ তাআলা সূর্যাস্তের পর হতে সুবহে সাদেক পর্যন্ত দুনিয়ার আসমানে এসে মানুষকে ক্ষমা,রিজিক,রোগ,বিপদ-আপদ থেকে মুক্তি ও বিভিন্ন মাকছুদ চাওয়ার জন্য তার বান্দাদের আহ্বান করতে থাকেন।হাদিছে বর্ণিত শবে বরাতের এই রাতে আল্লাহ তাআলা মুশরিক ও বিদ্বেষভাবাপন্ন ব্যক্তি ব্যতীত সকলকে ক্ষমা করে দেন।তদপুরী আরেকটি হাদিছে বর্ণিত আছে শবে বরাত এর এই রাতে মানুষের সারা বৎসরের হায়াত,মউত ও রিজিক লেখা হয়।তাই শবে বরাতের এই রাতে আল্লাহর কাছে বেশি বেশি দোয়া করা চাই।
- হাদিছ শরীফে বর্ণিত,যে শবে বরাতের এই রাতে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কবরস্থানে গিয়ে মৃত মুসলমানদের জন্য মাগফিরাতের দোয়া করেছিলেন।তাই এই রাতে মানুষ কবর জিয়ারতে যায়।নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ রাতে একা কবরস্থানে গিয়েছিলেন।তাই এ রাতে দলবল নিয়ে সমারোহ না করে একাকী জিয়ারতে যাওয়া হয়।
- নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শবে বরাতের রাতে মৃত মুসলমানদের জন্য মাগফিরাতের দোয়া করেছিলেন যা ঈছালে ছওয়াবের অন্তর্ভুক্ত।তাই শবে বরাতের এই রাতে জিয়ারত করা ছাড়াও অন্যান্য পদ্ধতিতে ঈছালে ছওয়াব করার অবকাশ রয়েছে।যেমন: দান-খয়রাত করা, নফল ইবাদত-বন্দেগি করে তার ছওয়াব মৃতদেরকে বখশে দেয়া।এরূপ করাও উত্তম হবে।
- শবে বরাতের এর পরের দিন,১৫ই শাবান রোজা রাখা উত্তম।
মানুষের কিছু ভ্রান্ত ধারণা
- হালুয়া রুটি তৈরি করা
- মোমবাতি জ্বালানো
- আতশবাজি ও পটকা ফোটানো
কিছু কথা
শবে মেরাজ ও শবে বরাতের এই রাত মুসলমান ভাই ও বোনেদের ইবাদত বন্দেগী এবং মহান আল্লাহ তায়ালাকে খুশি করার জন্য একটি উত্তম রাত।তাই সকল মুসলমানদের উচিত এ রাতে যত সম্ভব ইবাদত করা এবং আল্লাহ তায়ালাকে খুশি করা।যাতে আল্লাহ তা'আলা তাঁর বান্দাদের উপর তার রহমত বজায় রাখেন ও সকলকে জান্নাতবাসি হওয়ার তৌফিক দান করেন্।
নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url