নামাজের গুরুত্ব ও তাৎপর্য যেনে নিন

নামাজের ইতিহাস সম্পর্কে একজন মুসলমানের জ্ঞান অর্জন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।নামাজের ইতিহাস,নামাজের গুরুত্ব ও তাৎপর্য,নামাজ মানুষের জন্য কেন গুরুত্বপূর্ণ,নামাজ পড়লে আমরা কি কি সুফল পাই,নামাজ না পড়লে আমাদের কি শাস্তি হতে পারে,নামাজকে জান্নাতের দরজার চাবি বলে কেন আখ্যায়িত করা হয়।এই সকল বিষয় সম্পর্কে জানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।আমরা নামাজের সাথে সম্পর্কিত সকল বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো।

নামাজের গুরুত্ব

মুসলিমদের জন্য প্রথম এবং গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত হলো নামাজ।নামাজ যা ফারসি শব্দ সালাত ইসলাম ধর্মে মুসলমানদের জন্য একটি দৈনিক নিয়মিত ইবাদত। নামাজ একটি নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে পড়ার আদেশ কোরআন ও হাদিসে বর্ণিত রয়েছে।নামাজ ফরজ কাজ।কোন মুসলমান ব্যক্তি যদি ইচ্ছাকৃতভাবে ফরজ নামাজ আদায় না করে তবে তার কবিরা গুনাহ অর্থাৎ বড় পাপ হবে।ফরজ কাজ না করলে পরকালে শাস্তি অনিবার্য।নামাজ বা সালাত প্রতিটি প্রাপ্তবয়স্ক,জ্ঞান বুদ্ধি সম্পন্ন,নারী পুরুষ সকল মুসলিমের জন্য ফরজ বা আবশ্যিক।

ইসলামের বর্ণিত তথ্য অনুযায়ী মোহাম্মদ (সা:) ৬১০ খ্রিস্টাব্দে ৪০ বছর বয়সে নবুওয়াত লাভ করেন এবং আল্লাহর পক্ষ থেকে সকাল ও সন্ধ্যা দুই ওয়াক্তের নামাজ মুসলমানদের জন্য ফরজ (অবশ্য করণীয়) অর্থাৎ বাধ্যতামূলক হিসেবে আদেশ লাভ করেন।

পরবর্তীতে ৬১৪ খ্রিস্টাব্দে সকালে,সন্ধ্যায় এবং দুপুরের সময় সহ দৈনিক তিন ওয়াক্ত নামাজের আদেশ লাভ করেন।পুনরায় ৬১৯ খ্রিস্টাব্দে ২৭ শে রজব তারিখে মিরাজের রাতের সময় পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ হওয়ার আদেশ লাভ করেন।এভাবে মুসলমানদের জন্য পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ অর্থাৎ ফজর, যোহর, আসর, মাগরিব এবং ঈশার নামাজ পড়া ফরজ হয়ে পড়ে।

পোস্টসূচীপত্র:নামাজের গুরুত্ব ও তাৎপর্য যেনে নিন

নামাজের গুরুত্ব ও তাৎপর্য

নামাজের মাধ্যমে বান্দা তার প্রভুর সাথে সরাসরি কথা বলে,আল্লাহর কাছে নামাজের মাধ্যমে বান্দা তার মনের সুখ, দুঃখ, ইচ্ছা প্রকাশ করে।একমাত্র নামাজের মাধ্যমেই বান্দা তার আল্লাহর কাছাকাছি যেতে পারে এবং আল্লাহর সাথে কথা বলতে পারে।নামাজের অবস্থায় আল্লাহ তায়ালা তার সকল বান্দাদেরকে রক্ষা করেন এবং মনের ইচ্ছা পূরণ করেন।

আরো পড়ুন : ওযু ভঙ্গের কারণ কয়টি যেনে নিন

মানুষের নিজেকে আল্লাহর কাছে সমর্পণ করার সর্বোত্তম মাধ্যম হচ্ছে নামাজ।নামাজের মাধ্যমে বান্দারা তার আল্লাহর কাছাকাছি চলে যায়।নামাজের গুরুত্ব ও তাৎপর্য সম্পর্কে তাই সকল মুসলমানদের ইলম থাকা গুরুত্বপূর্ণ।তাই নামাজের গুরুত্ব ও তাৎপর্য সম্পর্কে জানতে চাইলে উক্ত পোস্টটি আপনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।নামাজের গুরুত্ব ও তাৎপর্য সম্পর্কে উক্ত পোস্টে আলোচনা করা হয়েছে।

ইসলামের পাঁচটি স্তরের মধ্যে দ্বিতীয় স্তরটি হচ্ছে সালাত বা নামাজ।পবিত্র কোরআন এবং হাদিসে গ্রন্থের বহু জায়গায় সালাত বা নামাজ কায়েম করার তাগিদ ও গুরুত্ব সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।

মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন,নিশ্চয়ই সালাত নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আদায় করা মুমিন বান্দাদের উপর ফরজ করা হয়েছে।(সহিহ হাদিস-সূরা আন-নিসা,১০৩)

আল্লাহ (সুব:) তায়ালা আরও এরশাদ করেছেন “তোমরা মহান আল্লাহর অভিমুখী হও এবং তাকে ভয় করো, আর সালাত প্রতিষ্ঠা কর, এবং মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না।”(হাদিস-সূরা আর-রুম, ৩১)

সালাতের গুরুত্ব ও তাৎপর্য সম্পর্কে মহানবী হযরত সাঃ অনেক কথা উল্লেখ করেছেন।আবু হুরাইরা (রা.) বলেছেন,তিনি আল্লাহর রাসূলকে বলতে শুনেছেন,“বলতো যদি তোমাদের বাড়ির সামনে দিয়ে একটি নদী থাকে,আর কোন এক ব্যক্তি তাতে প্রতিদিন পাঁচবার নিয়মিত গোসল করে

আরো পড়ুন : স্ত্রীর প্রতি স্বামীর দায়িত্ব গুলো কি কি যেনে নিন

তাহলে কি তার দেহে কোন ময়লা থাকবে?”সাহাবীরা উত্তর দিয়ে বলেন,সেই ব্যক্তির দেহে কোন ময়লা থাকবে না। আল্লাহর রাসূল (সা:) বললেন,“এই হলো পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায়ের উদাহরণ ও তার গুরুত্ব।সালাত আদায়ের মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা বান্দার সকল গুনাহ সমূহ মিটিয়ে দেন।” (সহিহ বুখারী শরীফ-অধ্যায় ৯/৬, হাদিস নং/৫২)

নামাজের ফরজ কয়টি

নামাজের ভেতরের যেকোনো ফরজ ছুটে গেলে নামাজ বাতিল হয়ে যাবে

নামাজ আরাম্ভের পূর্বে ৭ টি ফরজ-

১.নামাজের জায়গা পবিত্র হতে হবে।
২.পরিধানকৃত কাপড় পবিত্র হতে হবে।
৩.শরীরের প্রত্যেক অংশ পবিত্র হতে হবে।
৪.শরীর সম্পূর্ণরূপে ঢেকে রাখতে হবে (পুরুষদের শুধুমাত্র নাভি থেকে হাঁটু পর্যন্ত এবং মহিলাদের কেবলমাত্র হাত ও পায়ের পাতা এবং মুখমন্ডল ব্যতীত সমস্ত শরীর ঢেকে নামাজ আদায় করতে হবে)।
৫.কিবলামুখী অবস্থায় নামাজ পড়তে হবে।
৬.নামাজের সকল ওয়াক্ত সম্পর্কে জানতে হবে।
৭.নামাজ শুরুতে নিয়ত বাঁধতে হবে।

নামাজের আরম্ভ করার পর ৬ টি ফরজ-

১.নামাজ দাঁড়ানো অবস্থায় পড়া শুরু করতে হবে।
২.তাকবীরে তাহরীমা (আল্লাহু আকবার বলে নামাজ শুরু করতে হবে)
৩.কিরাত পড়তে হবে।
৪.রুকু করতে হবে।
৫.সিজদা করতে হবে।
৬. শেষ বৈঠকে নামাজের ওয়াক্ত শেষ করতে হবে।

পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের ফরজ কয়টি

পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের ফরজ সর্বমোট ১৩ টি।পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়া মুসলমানদের জন্য ফরজ কাজ।মহান আল্লাহ তাআলা মুসলমানদের জন্য পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ অর্থাৎ বাধ্যতামূলক করেছেন।আমরা মুসলমান বান্দাগণ 

আরো পড়ুন : শবে মেরাজ ও শবে বরাতের আমল যেনে

আমাদের সৃষ্টিকর্তা মহান আল্লাহ তালাকে সন্তুষ্ট করার জন্য পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করে থাকি।মহান আল্লাহ তাআলা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ কে আমাদের জান্নাতের চাবি হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।তাই প্রত্যেক মুসলমান ভাই ও বোনেদের পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা বাধ্যতামূল।

নামাজের ওয়াজিব ১৪ টি

ফরজ কাজের মত ওয়াজিব মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদের জন্য বাধ্যতামূলক করেছেন।ফরজ কাজ আদায় না করলে যেমন শাস্তি পেতে হবে,তেমনি ওয়াজিব কাজ আদায় না করলেও শাস্তি পেতে হবে।

নামাজের মধ্যে ফরজ কাজ আদায় না করলে নামাজ ভঙ্গ হয়ে যাবে,অর্থাৎ নামাজ পুনরায় প্রথম থেকে শুরু করতে হবে। কিন্তু নামাজের ওয়াজিব কাজ ছুটে গেলে নামাজ পুরোপুরিভাবে ভঙ্গ হবে না, তবে নামাজের একটি কাজ বাদ পড়ায় এই ঘাটতি সম্পন্ন করার জন্য শরীয়ত মোতাবেক সাজদায়ে সাহো বা ভুলের সাজদা দেয়ার নিয়ম রয়েছে।

নামাজের ওয়াজিব সমূহ নিচে দেওয়া হল

১.নামাজের ওয়াজিব সমূহের মধ্যে সর্বপ্রথম সূরা ফাতিহা পাঠ করা।
২.অন্য যে কোন সূরা (অর্থাৎ বড় এক আয়াত অথবা ছোট তিন আয়াত) পড়া ওয়াজিব।
৩.ফরজ নামাজের প্রথম দুই রাকাতে সূরা মিলাতে হবে:ফরজ নামাজের তৃতীয় রাকাতে শুধু সুরা ফাতিহা পাঠ করা ওয়াজিব (ফরজ ব্যতীত বাকি সব নামাজের প্রতি রাকাতেই সূরা মিলাতে হবে)।
৪.রুকু থেকে সোজা হয়ে দাঁড়ানো নামাজের ওয়াজিব।
৫.দুই সিজদার মাঝখানে সোজা হয়ে বসা নামাজের ওয়াজিব।
৬.প্রথম বৈঠক শেষ করা নামাজের ওয়াজিব।
৭.উভয় বৈঠকে আত্তাহিয়াতু পাঠ করা নামাজের ওয়াজিব।
৮.বিতর নামাজে দোআয়ে কুনুত পাঠ করা নামাজের ওয়াজিব।
৯.ইমামের সাথে জোহর, আসর নামাজে কিরাত আস্তে পড়া এবং ফজর,মাগরিব,ঈশা,জুমুআ,২ ঈদ,তারাবীর রমজান মাসের বিতর নামাজে কিরাত জোরে পাঠ করা নামাজের ওয়াজিব।এছাড়াও,সুন্নাত ও দিনের বেলার নফল নামাজে কি রাত আসতে পাঠ করাও নামাজের ওয়াজিব।
১০.সালাম এর সাথে নামাজ শেষ করা।
১১.মুক্তাদীদের ইমামকে অনুসরণ করা ওয়াজিব।
১২.ঈদের নামাজের সময় অতিরিক্ত ছয় তাকবীর বলা ওয়াজিব।
১৩.ধীরস্থির ভাবে রুকন গুলো সম্পূর্ণরূপে আদায় করা ওয়াজিব।
১৪.নামাজের মধ্যে ধারাবাহিকতা বজায় রাখা নামাজের ওয়াজিব সমূহের মধ্যে অন্তর্গত।

ওযুর ফরজ কয়টি

নামাজ আদায় করা মুসলমানদের জন্য ফরজ কাজ।আর নামাজ আদায় করতে হলে শরীর পবিত্র থাকতে হবে।শরীরকে পবিত্র করার জন্য ওযু করা আবশ্যক। ওজুর ফরজ চারটি।এই চারটি ফরজ সম্পূর্ণ না হলে ওযু সম্পন্ন হয় না।আর ওযু সম্পন্ন না হলে মুসলমানদের নামাজ আদায় করা হবে না।

ওযুর ফরজ সমূহ

১.সমস্ত মুখমণ্ডল একবার ধোঁয়া ওজুর ফরজ কাজ।
২.উভয় হাত একবার ধোঁয়া ফরজ।
৩.সম্পূর্ণ মাথার চার ভাগের এক ভাগ মাসাহ করা ফরজ।
৪.দুই পায়ের গোড়ালি পর্যন্ত একবার ধোঁয়া ওযুর ফরজ।

পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ মোট কত রাকাত

পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা মুসলমানদের জন্য ফরজ কাজ ফরজ কাজ করা বাধ্যতামূলক।ফরজ কাজ না করলে মহান আল্লাহ তা'আলা তাঁর বান্দাদের জন্য ভয়াবহ শাস্তি নির্ধারিত করে রেখেছেন।সারাদিনে শুধুমাত্র পাঁচবার নামাজ পড়া ফরজ।মুসলমানেরা চাইলে সারাদিনে তাদের ইচ্ছামত আরোও নামাজ পড়তে পারে,যাকে আমরা নফল নামাজ পড়ে আখ্যায়িত করে থাকি।

পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের নাম ফজর,জোহর,আছর,মাগরিব,ইশা:

  • ফজর-দুই রাকাত সুন্নত,দুই রাকাত ফরজ।
  • যোহর-চার রাকাত সুন্নাত,চার রাকাত ফরজ,দুই রাকাত সুন্নাত।
  • আসর-চার রাকাত গায়র মুয়াক্কাদা,চার রাকাত ফরজ।
  • মাগরিব-তিন রাকাত ফরজ,দুই রাকাত সুন্নাত।
  • ঈশা-চার রাকাত সুন্নাত,চার রাকাত ফরজ,দুই রাকাত সুন্নাতে মুয়াক্কাদা,দুই রাকাত সুন্নাতে গায়র মুয়াক্কাদা,তিন রাকাত বেতরে।

নামাজ না পড়ার শাস্তি

নামাজ না পড়ার শাস্তি সম্পর্কে জানা একজন মুসলমান ব্যক্তির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ইসলামিক বিষয়।নামাজ না পড়ার শাস্তি সম্পর্কে না জানলে উক্ত পোস্টে তা স্পষ্ট ভাবে দেয়া হলো।নামাজ না পড়ার শাস্তি সম্পর্কে মুসলমান ভাই ও বোনেরা না জানলে তারা আখিরাত এবং পরকালের শাস্তি সম্পর্কে অজানা থেকে যাবে।এবং নিজের অজান্তেই গুনার ভাগীদার হবে।

আরো পড়ুন : নামাজ ভঙ্গের কারণ কয়টি যেনে নিন

নামাজ না পড়লে যেমন একজন মুসলমান ব্যক্তি পরকালে শাস্তি ভোগ করবে,তার সাথে ইহকালেও অর্থাৎ পৃথিবীতে জীবিত থাকা অবস্থাতেও তাদেরকে শাস্তি ভোগ করতে হবে।
নামাজ না পড়লে মহান আল্লাহ তায়ালা ছয়টি শাস্তি আমাদেরকে দুনিয়াতেই ভোগ করার কথা বলেছেন।

১.আল্লাহ তায়ালা নামাজ ত্যাগকারীদেরকে দুনিয়ার জীবনের সকল কাজের বরকত, রহমত থেকে বঞ্চিত করেন।নামাজ ত্যাগকারীদেরকে আল্লাহ তাআলা কাফের বলে আখ্যায়িত করেছেন।
২.যে ব্যক্তি নামাজ ত্যাগ করে সেই ব্যক্তির চেহারায় কোন নূর বা উজ্জলতা থাকে না।
৩.যে সকল ব্যক্তি নামাজ ত্যাগ করে, তাদেরকে দুনিয়ার ক্রীত ভাল কাজের কোন পুরস্কার দেয়া হয় না।
৪.নামাজ ত্যাগকারি ব্যক্তির জন্য যদি কেউ দোয়া করে তাহলে তা ঐ ব্যক্তির জন্য সেই দোয়া কোন কাজে আসবে না।
৫.নামাজ পরিত্যাগকারী সকল ব্যক্তি দুনিয়ার সর্বক্ষেত্রে, প্রতিটি পদক্ষেপে আল্লাহ তায়ালার সকল সৃষ্ট জীবের কাছে ঘৃণিত। কোন শ্রেষ্ঠ জীবই তাদেরকে পছন্দ করবে না।
৬.ইসলামের সকল শান্তি ও প্রতিশ্রুতি বা ওয়াদা থেকে বঞ্চিত হবে।
(সহীহ হাদিস-শারহুল আকিদাতুত তাহাবী: ২৬৮)

নামাজ না পড়লে ইহকালে যেমন শাস্তি দেওয়া হয় তেমনি পরকালেও এর কঠিন শাস্তি ভোগ করতে হয়।মহান আল্লাহ তায়ালা আল কুরআনে বারবার জোর দিয়ে বলেছেন-
“জালিকা ইয়াওমুল হাক্কু”-এই দিন নিশ্চিতই আসবেই।যে সকল ব্যক্তি নামাজ পরবেনা তাদের মাথায় পাথর দিয়ে আঘাত করে সেই মাথা চূর্ণ-বিচূর্ণ করে দেওয়া হবে।

ফরজ নামাজ আদায় না করার শাস্তি

একদা একবার রাসূলুল্লাহ (সা:) কে এক স্বপ্নে কয়েকটি পাপের শাস্তি দেখানো হয়।উল্লেখ্য,নবী ও রাসূলদের সব স্বপ্ন ওহী, অর্থাৎ আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রেরিত সত্য স্বপ্ন,এতে কোন ভুল নেই।

একদিন এক সকালে রাসূলুল্লাহ (সা:) বলেন- “আজ রাতে আমার সহিত দুইজন আগন্তুক এসেছিল।তারা দুইজন আমাকে বলল,আমাদের সাথে চলুন।আমি তাদের সাথে সাথে গেলাম।আমরা তখন এমন এক লোকের কাছে পৌঁছালাম,যে এক জায়গায় চিৎ হয়ে শুয়ে ছিল। 

এবং একজন ব্যক্তি তার সামনে পাথর নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।পাথর হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা ব্যক্তি শুয়ে থাকা ব্যক্তির মাথায় আঘাত করছে এবং মাথা থেতলে দিচ্ছে।যখন ব্যক্তিটি পাথর নিক্ষেপ করছে তখন তা গড়িয়ে অন্যত্র চলে যাচ্ছে। এবং পুনরায় ব্যক্তিটি পাথরটি তুলে নিচ্ছে।

আরো পড়ুন : পুরুষ ও মহিলার নামাজ এর পার্থক্য

পাথরটি ফিরিয়ে আনার সাথে সাথে শুয়ে থাকা লোকটির মাথা পুনরায় ভালো হয়ে যাচ্ছে।পাথর হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা ব্যক্তিটি পূর্বের মতো সেই ব্যক্তির মাথা থেতলে দিয়ে তাকে পুনরায় শাস্তি দিচ্ছে।রাসূলুল্লাহ  (সা:) বললেন,“আমি আমার সাথে থাকা সঙ্গীদেরকে জিজ্ঞাসা করলাম: সুবহানাল্লাহ! এরা কারা? সে দুজন ব্যক্তি পুনরায় উত্তর দিলেন, সে হলো এমন একজন ব্যক্তি যেই ব্যক্তি কোরআন মুখস্থ করে তা পরিত্যাগ করেছে এবং ফরজ নামাজ না পড়েই ঘুমিয়ে গেছে।(সহিহ বুখারী হাদিস-রিয়াদুস সালেহীন:১৫৪৬।

নামাজের প্রতি যে সকল ব্যক্তি উদাসীন,অর্থাৎ আযান দেওয়ার সাথে সাথে নামাজ না পড়ে নামাজের ওয়াক্ত শেষ হওয়ার কিছু মুহূর্ত আগে নামাজ পড়ে সেই সকল ব্যক্তির জন্য কঠিন শাস্তি অপেক্ষা করছে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url